আলো - সপ্তম শ্রেণী - বিজ্ঞান || Light - Class VII - Science

আলো - সপ্তম শ্রেণী - বিজ্ঞান || Light - Class VII - Science

Light

Class VII

আলো

সপ্তম শ্রেণী








আলো কি?

প্রশ্ন: আলো বলতে কি বোঝ?

উঃ আলো এক প্রকার শক্তি, যা তরঙ্গের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে আমাদের দর্শনের অনুভূতি ঘটায়। আলো নিজে দৃশ্যমান নয় কিন্তু অন্য সকল বস্তুকে দৃশ্যমান করে তুলে।


প্রশ্ন: এক প্রকার শক্তি - যুক্তি দাও।

উঃ আমারা জানি, শক্তি এক রূপ থেকে অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে। তেমনি আলোকে অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় আবার অন্য শক্তি থেকে আলো পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় - (১) আলোক তড়িৎ কোশে আলো পড়লে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে আলোকশক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। আবার (২) প্লাটিনামের সরু তার কে তাপ প্রয়োগ এর সাহায্যে উত্তপ্ত করলে উত্তপ্ত তার থেকে আলো নির্গত হয়। এখানে তাপশক্তি আলোক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে- আলো এক প্রকার শক্তি।


১।প্রশ্ন: সপ্রভ বস্তু কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

উঃ যেসব বস্তু থেকে আলো নির্গত হয় বা যে সব বস্তু আলো বিকিরণ করে তাদেরকে 'স্বপ্রভ বস্তু' বা 'আলোক উৎস' বলে।

উদাহরণ: সূর্য, তারা বা নক্ষত্র, বৈদ্যুতিক বাতি, জলন্ত মোমবাতি, জোনাকি ইত্যাদি।


প্রশ্ন: অপ্রভ বা নিষ্প্রভ বস্তু কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

উঃ যে সকল বস্তু নিজে আলো নির্গত করতে পারেনা কিন্তু স্বপ্রভ বস্তুর আলোয় নিজে আলোকিত হয় তাকে নিষ্প্রভ বস্তু বলে।

উদাহরণ: ইট, কাঠ, চেয়ার, টেবিল, ঘরবাড়ি, গাছপালা ইত্যাদি।


আলোক মাধ্যম

প্রশ্ন: স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

উঃ যেসব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সহজে চলাচল করতে পারে তাকে স্বচ্ছ মাধ্যম বলে।

উদাহরণ: জল, কাচ, বায়ু প্রভৃতি।


প্রশ্ন: অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

উঃ যেসব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারে না তাকে অস্বচ্ছ মাধ্যম বলে।

উদাহরণ: কাঠ, মাটি, পাথর প্রভৃতি।


প্রশ্ন: ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

উঃ যেসব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো অংশিক ভাবে চলাচল করতে পারে তাকে ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম বলে।

উদাহরণ: ঘষা কাচ, তৈলাক্ত কাগজ প্রভৃতি।


প্রশ্ন: সমসত্ত্ব মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উঃ যে সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সরলরেখা বরাবর সব দিকে সমান বেগে চলতে পারে তাদের সমসত্ব মাধ্যম বলে।

উদাহরণ: জল, বায়ু, কাচ প্রভৃতি


প্রশ্ন: অসমসত্ত্ব মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উঃ যে সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সরলরেখা বরাবর চলতে পারে না ও আলোর বেগও সমান থাকে না তাদের অসমসত্ব মাধ্যম বলে।

উদাহরণ: অভ্র, কোয়ার্টজ প্রভৃতি



প্রশ্ন: আলো সরল রেখায় চলে- প্রমাণ করো।

উঃ আলো সরল রেখায় চলে প্রমাণ করার জন্য একটি জ্বলন্ত মোমবাতি এবং দুটি পাইপ দেওয়া হল পাইপ দুটির মধ্যে একটি সোজা এবং অন্যটি বাঁকা। এবার এক চোখ বন্ধ করে সোজা পাইপটি দিয়ে জলন্ত মোমবাতির শিখাটিকে দেখার চেষ্টা করলে খুব সহজেই মোমবাতির শিখাটি দেখতে পাব। অনুরূপ ভাবে বাঁকা পাইপ দিয়ে মোমবাতির শিখা দেখার চেষ্টা করলে মোমবাতির শিখাটিকে দেখতে পাওয়া যাবে না। এই দুটি ঘটনা থেকে বোঝা গেল প্রথম পাইপ সোজা থাকার দরুন আলো খুব সহজেই আমাদের চোখে এসে পড়ে। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আমরা মোমবাতির শিখাটি দেখতে পেলাম না কারণ পাইপটি বাঁকা ছিল। এর থেকে প্রমাণিত হয় আলো সরলরেখা বরাবর চলাচল করে।


আলোক রশ্মি

প্রশ্ন: আলোক রশ্মি কাকে বলে?

উঃ আলো সরল রেখায় চলাচল করে। আলোর চলার পথকে তীর চিহ্ন যুক্ত যে কাল্পনিক সরলরেখা দিয়ে বোঝানো হয় তাকে আলোকরশ্মি বলে।


প্রশ্ন: আলোক রশ্মিগুচ্ছ কাকে বলে?

উঃ একসঙ্গে অসংখ্য আলোক রশ্মিকে আলোকরশ্মি গুচ্ছ বলা হয়। 


আলোক রশ্মিগুচ্ছ কত প্রকার ও কি কি? প্রত্যেক প্রকারের সংজ্ঞা দাও।

প্রশ্ন: আলোকরশ্মি গুচ্ছ তিন প্রকার। যথা:  

১) সমান্তরাল আলোকরশ্মি গুচ্ছ। 

২) অভিসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ। 

৩) অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ।


১) সমান্তরাল আলোকরশ্মি গুচ্ছ: যে আলোক রশ্মিগুচ্ছের রশ্মিগুলি পরস্পর সমান্তরালে থাকে তাদের সমানতরাল রসের উৎস বলে।


২) অভিসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ: যে আলোক রশ্মিগুচ্ছের রশ্মি গুলি কোন একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয় বা হওয়ার চেষ্টা করে তাদের অভিসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ বলে। 


৩) অপসারী আলোক রশ্মিগুচ্ছ: যে আলোক রশ্মিগুচ্ছের রশ্মিগুলি কোন একটি বিন্দু থেকে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে হয় বা রশ্মিগুলি পরস্পর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যায় তাদের অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ বলে।


ছায়া ও উপচ্ছায়া

প্রশ্ন: ছায়া বা প্রচ্ছায়া কাকে বলে?

উঃ আলোর গতিপথে কোন অস্বচ্ছ বস্তুুুু থাকলে বা রাখলে বস্তুুটির পেছনে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলের সৃষ্টি হয়। এই অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলটিকেে ছায়া বা প্রচ্ছায়া বলা হয়।


প্রশ্ন: ছায়ার আকার বা প্রকৃতি কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?

উঃ ছায়া সৃষ্টির জন্য তিনটি বস্তুর উপস্থিতি একান্ত কাম্য। এগুলি হল- আলোক উৎস, অস্বচ্ছ বস্তু (যে বস্তুর ছায়া সৃষ্টি হয়) ও পর্দা (যার উপর ছায়া পড়ে)। তাই ছায়ার আকার বা প্রকৃতি নির্ভর করে এই তিনটে বস্তুর অবস্থান ও আকৃতির উপর। সহজ ভাবে ছায়ার আকার বা প্রকৃতি নির্ভর করে ১) আলোক উৎসের আকারের উপর। ২) অস্বচ্ছ বস্তুর আকারের উপর। ৩) আলোক উৎস থেকে অস্বচ্ছ বস্তুর দূরত্বের উপর ৪) স্বচ্ছ বস্তু থেকে পর্দার দূরত্বের উপর।


প্রশ্ন: উপচ্ছায়া বলতে কী বোঝো?

উঃ বিস্তৃত আলোক উৎসের সামনে কোন অস্বচ্ছ বস্তু থাকলে যে ছায়া বা প্রচ্ছায়ার সৃষ্টি হয় তার চারপাশে একটি কম অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থান থাকে, যেখানে আলোক উৎসের সব জায়গা থেকে আলো না আসতে পারলেও কিছু কিছু অংশ থেকে আলো পৌঁছায়, এই কম অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলটিকে উপচ্ছায়া বলা হয়।


সূচিছিদ্র ক্যামেরা

প্রশ্ন: একটি সরল সূচিছিদ্র ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো বা সূচিছিদ্র ক্যামেরা কাকে বলে?

উঃ এটি একটি আয়তাকার কার্ডবোর্ডের বাক্স, যার সামনের দেওয়ালে মাঝ বরাবর একটি সূক্ষ্ম ছিদ্র থাকে এবং পিছনের দেয়ালে কার্ডবোর্ডের বদলে একটি ঘষা কাচ থাকে। পিছনের কাচ বাদ দিয়ে অন্যান্য অংশ কালো রং করা থাকে এতে আলোর প্রতিফলন বন্ধ করা যায় ও প্রতিকৃতি খুব উজ্জ্বল হয়। এবার সূক্ষ্ম ছিদ্রটি সামনে কোন স্বপ্রভ আলোক উৎস রাখলে ঘষা কাঁচের দেয়ালে তার উল্টো প্রতিকৃতি পাওয়া যায়। কিরকম প্রতিকৃতি সৃষ্টিকারী যন্ত্রকে সূচিছিদ্র ক্যামেরা বলা হয়।


প্রশ্ন: সূচিছিদ্র ক্যামেরায় সৃষ্ট প্রতিকৃতির বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?

উঃ সূচিছিদ্র ক্যামেরায় সৃষ্ট প্রতিকৃতির বৈশিষ্ট্য গুলি হল - ১) বস্তুর সাপেক্ষে প্রতিকৃতি উল্টো দেখায়। ২) ক্যামেরার ছিদ্র ছোট (বা ক্ষুদ্র) হলে প্রতিকৃতি স্পষ্ট হয় আর ছিদ্র বড় হলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট দেখায়। ৩) ক্যামেরার ছিদ্র থেকে বস্তুকে দূরে সরালে প্রতিকৃতির আকার ছোট হয় এবং বস্তুকে ছিদ্রের  কাছে আনলে প্রতিকৃতি আকার বড় হয়। ৪) ক্যামেরার ছিদ্র থেকে উৎসের দূরত্ব স্থির রেখে বক্স এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করলে বা ঘষা কাচটিকে ছিদ্র থেকে দূরে সরিয়ে নিলে প্রতিকৃতির আকার বড় হয় এবং ছিদ্রের কাছে আনলে প্রকৃতির আকার ছোট হয়। ৫) ছিদ্রের আকৃতি যাই হোক না কেন, প্রতিকৃতির আকৃতি সবসময় বস্তুর মতো হয়।


প্রশ্ন: সূচিছিদ্র ক্যামেরার ছিদ্র বড় হলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট হয় কেন?

উঃ সূচিছিদ্র ক্যামেরার ছিদ্র বড় হলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট হয় কারন- একটি বড় ছিদ্রকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একক ছিদ্রের সমষ্টি হিসেবে কল্পনা করা যায়। তাই প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একক ছিদ্র এক একটি করে আলাদা আলাদা প্রতিকৃতির সৃষ্টি করে। কিন্তু ছিদ্র গুলি পাশাপাশি অবস্থান করায় প্রতিকৃতি গুলিও একে অপরের খুব কাছাকাছি থাকে ও একে অপরের উপর পড়ে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। ফলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট দেখায়।

আলোর প্রতিফলন

প্রশ্ন: আলোর প্রতিফলন কাকে বলে?

উঃ আলো যখন কোন স্বচ্ছ ও সমসত্ত্ব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে গিয়ে অন্য কোনো মাধ্যমে আপতিত হয় তখন দুই মাধ্যমের বিভেদতল থেকে আপতিত আলোকরশ্মির কিছু অংশ অভিমুখ পরিবর্তন করে আবার প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে। আলোর এই ঘটনাকে আলোক প্রতিফলন বলে।


প্রশ্ন: আলোর প্রতিফলন কত প্রকার ও কি কি?

উঃ আলোর প্রতিফলন দুই প্রকার

১) নিয়মিত প্রতিফলন

২) বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন


প্রশ্ন: নিয়মিত প্রতিফলন কাকে বলে?  উদাহরণ দাও।

উঃ সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ যখন কোন মসৃণ প্রতিফলক তলে আপতিত হয় তখন ওই আলোক রশ্মিগুচ্ছ সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ রূপেই প্রতিফলিত হয়। আলোর এইরূপ প্রতিফলনকে নিয়মিত প্রতিফলন বলে। 

উদাহরণ: সমতল দর্পণ,  মসৃণ ধাতব তল, স্থির জলের উপরিতল প্রভৃতি আলোর  নিয়মিত প্রতিফলন ঘটায়।


 প্রশ্ন: বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন কাকে বলে?  উদাহরণ দাও।

উঃ সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ যখন কোন অমসৃণ প্রতিফলক তলে আপতিত হয় তখন ওই আলোক রশ্মিগুচ্ছ সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ রূপে প্রতিফলিত না হয়ে , বিক্ষিপ্ত আকারে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আলোর এইরূপ প্রতিফলনকে বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন বলে। 

উদাহরণ: ঘষা কাচ, সাদা কাগজ, ঘরের অমসৃণ দেওয়াল প্রভৃতি আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন ঘটায়।


 প্রশ্ন: নিয়মিত প্রতিফলন ও বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের পার্থক্য লিখ।

উঃ নিয়মিত প্রতিফলন ও বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের পার্থক্য


নিয়মিত প্রতিফলন ও বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের পার্থক্য 

নিয়মিত প্রতিফলন বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন
1. নিয়মিত প্রতিফলনের জন্য মসৃণ ও চকচকে প্রতিফলক তলের প্রয়োজন 1. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের জন্য অমসৃণ ও খসখসে প্রতিফলক তলের প্রয়োজন
2. নিয়মিত প্রতিফলনের ক্ষেত্রে প্রতিফলিত রশ্মি গুলি একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রতিফলিত হয় 2. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের ক্ষেত্রে প্রতিফলিত রশ্মি গুলি বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে
3. নিয়মিত প্রতিফলনে প্রতিফলক বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় 3. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় না
4. প্রতিফলককে ঘুরিয়ে ইচ্ছেমতাে প্রতিফলিত রশ্মির দিক পরিবর্তন করা যায় 4. প্রতিফলককে ঘুরালেও প্রতিফলিত রশ্মির দিক পরিবর্তন বোঝা যায় না

প্রশ্ন:সিনেমার পর্দা সাদা ও অমসৃণ করা হয় কেন?

উঃ সিনেমার পর্দা সাদা হওয়ার দরুন আপতিত আলোর কোন অংশই শোষিত হয় না হলে ছবির উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। এবং অমসৃণ করা হয় কারণ পর্দার অমসৃণ তলে আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয় ও প্রতিফলন আলো চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে ফলে সিনেমা হলের যেকোন আসনের দর্শক ছবিটি সহজেই দেখতে পায়।


প্রশ্ন:বইয়ের পাতা সাদা ও খসখসে করা হয় কেন?

উঃ বইয়ের পাতা সাদা হওয়ার জন্য পাতা দ্বারা কোন আলো শোষিত হয় না ফলে লেখা গুলো স্পষ্ট দেখায়। এবং পাতা খসখসে করা হয় যাতে করে আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয় ও যে কোনো দিক থেকেই লেখাগুলো পড়া যায়।


প্রশ্ন:আলোর প্রতিফলনের সূত্র গুলি লেখ।

আলোর প্রতিফলন দুটি সূত্র মেনে চলে। এগুলি হল -

১) আলোর প্রতিফলনের প্রথম সূত্র: আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি ও আপাতন বিন্দুতে প্রতিফলকের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে থাকে।


২) আলোর প্রতিফলনের দ্বিতীয় সূত্র: প্রতিফলন কোণের মান সর্বদা আপাতন কোণের মানের সমান হয়।


আলোর প্রতিসরণ

প্রশ্ন: আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?

উঃ আলোক রশ্মি যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য আরেকটি ভিন্ন মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন দুই মাধ্যমের বিভেদ তল থেকে ওই আলোক রশ্মির অভিমুখ পরিবর্তন হয়। দ্বিতীয় মাধ্যমে আলোক রশ্মির এইরূপ অভিমুখ পরিবর্তনের ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।ে।

আলোর প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখ

উঃ
প্রথম সূত্রঃ আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে অবস্থান করে
দ্বিতীয় সূত্রঃ নির্দিষ্ট মাধ্যমদ্বয় ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে, আপতন কোণের সাইন (sin) এবং প্রতিসরণ কোণের সাইনের (sin) অণুপাত সর্বদা ধ্রুবক থাকে।

প্রতিবিম্ব

প্রশ্ন: প্রতিবিম্ব কাকে বলে?

উঃ কোন বিন্দুউৎস থেকে আগত অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোন বিন্দুতে মিলিত হয় অথবা অন্য কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তবে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুউৎসের প্রতিবিম্ব বলে।

প্রশ্ন: প্রতিবিম্ব কত প্রকার ও কি কি?

উঃ প্রতিবিম্ব দুই প্রকার সদবিম্ব ও অসদবিম্ব।

প্রশ্ন: সদবিম্ব কাকে বলে?

উঃ কোন বিন্দুউৎস থেকে আগত অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোন বিন্দুতে মিলিত হয়, তবে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর সদবিম্ব বলে।

উদাহরণ: সিনেমার পর্দায় ও ক্যামেরায় গঠিত প্রতিবিম্ব সদবিম্ব।


প্রশ্ন: অসদবিম্ব কাকে বলে?

উঃ কোন বিন্দুউৎস থেকে আগত অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তবে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর অসদবিম্ব বলে।

উদাহরণ: সমতল দর্পণ বা আয়নায় গঠিত প্রতিবিম্ব, স্থির জলে সৃষ্ট প্রতিবিম্ব, মরুভূমির মরীচিকা প্রভৃতি অসদবিম্বের উদাহরণ। অসদবিম্ব চোখে দেখা যায় কিন্তু পর্দায় ধরা যায় না।


প্রশ্ন: সদবিম্ব ও সদবিম্ব প্রার্থক্য লিখ।

সদবিম্ব ও অসদবিম্ব প্রার্থক্য

সদবিম্ব অসদবিম্ব
1. প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত আলোকরশ্মি গুচ্ছ অন্য কোন বিন্দুতে মিলিত হলে, যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তা সদবিম্ব। 1. প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত আলোকরশ্মি গুচ্ছ অন্য কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হলে, যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তা অসদবিম্ব।
2. সদবিম্বকে চোখে দেখা যায় ও পর্দায় ফেলা যায়। 2. অসদবিম্বকে চোখে দেখা গেলেও ও পর্দায় ফেলা যায় না।
3. সদবিম্ব বস্তুর সাপেক্ষে অবশীর্ষ বা উল্টো দেখায় 3. অসদবিম্ব বস্তুর সাপেক্ষে সমশীর্ষ বা সোজা দেখায়
4. সিনেমার পর্দায় ও ক্যামেরায় গঠিত প্রতিবিম্ব সদবিম্ব। 4. সমতল দর্পণ বা আয়নায় গঠিত প্রতিবিম্ব ও স্থির জলে সৃষ্ট প্রতিবিম্ব অসদবিম্ব



আরও পড়ার জন্য নিচের পোষ্টগুলোও দেখতে পারেন


আমাদের আলোচনা আপনাদের কেমন লাগছে নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানান। আপনাদের মূল্যাবান মতামত আমাদের অনুপ্রানিত করবে আরো ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

Your comment will be visible after approval