তাপ - সপ্তম শ্রেণী - বিজ্ঞান || Heat - Class VII - Science

তাপ - সপ্তম শ্রেণী - বিজ্ঞান || Heat - Class VII - Science

তাপ : Heat for class 7 





পশ্চিম বঙ্গ শিক্ষা পর্ষদের সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক এর তাপ অধ্যায়ের কিছু প্রশ্ন ও তাদের উত্তর নিয়ে আজকে আমাদের আলোচনা। আশাকরি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশ্নগুলির উত্তর খুব কাজে লাগবে। বিষয়ের মধ্যে যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবে? আমরা প্রশ্নগুলির উত্তর দেবার যথাসাধ্য চেষ্টা করব। তাহলে আসুন দেখে নিন আজকের আলোচনা তাপ।

১। তাপ কাকে বলে? 
উঃ তাপ এক প্রকার শক্তি যা গ্রহণে বস্তু গরম হয় ও বর্জনের বস্তু ঠান্ডা হয়।

২। তাপ কত প্রকার ও কি কি?
উঃ প্রধানত তিন প্রকার- ১) বোধগম্য তাপ ২) লীন তাপ ও ৩) বিকীর্ণ তাপ।

৩। তাপের একক কি?
উঃ CGS পদ্ধতিতে তাপের একক ক্যালোরি ও SI পদ্ধতিতে তাপের একক জুল। 

৪। কোন যন্ত্রের সাহায্যে তাপ নির্ণয় করা হয়?
উঃ যে যন্ত্রের সাহায্যে তাপের পরিমাণ নির্ণয় করা হয় তার নাম ক্যালরিমিটার।

৫। উষ্ণতা বলতে কী বোঝোয়?
উঃ তাপমাত্রা বা উষ্ণতা হলো বস্তুর এমন এক তাপীয় অবস্থা যা নির্ণয় করে বস্তুটি (তার সংস্পর্শে থাকা) অন্য কোন বস্তুকে তাপ দেবে নাকি অন্য কোন বস্তু থেকে তাপ নেবে। অর্থাৎ উষ্ণ বস্তু শীতল বস্তু কে তাপ দেবে বা পক্ষান্তরে শীতল বস্তু উষ্ণ বস্তু থেকে তাপ নেবে।
কোন বস্তু কতটা গরম বা কতটা ঠাণ্ডা তা জানতে হলে আমাদের সাহায্য নিতে হবে তাপমাত্রা বা উষ্ণতা শব্দটির। 

৬। উষ্ণতার একক কি?
উঃ CGS পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক সেলসিয়াস ও SI পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক কেলভিন।

৭। উষ্ণতা মাপক যন্ত্রের নাম লেখ।
উঃ তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের নাম থার্মোমিটার।

৮। তাপ ও তাপমাত্রার পার্থক্য লিখ।

তাপ ও তাপমাত্রার পার্থক্য

তাপ তাপমাত্রা
1. তাপ হল এক প্রকার শক্তি 1. তাপমাত্রা হল বস্তুর তাপীয় অবস্থা
2. তাপ হল তাপমাত্রার কারণ 2. তাপমাত্রা হল তাপের ফল
3. তাপের পরিমাপ করা হয় ক্যালরিমিটারের সাহায্যে 3. তাপমাত্রার পরিমাপ করা হয় থার্মোমিটারের সাহায্যে
4. CGS ও SI পদ্ধতিতে তাপের একক যথাক্রমে ক্যালোরি ও জুল 4. CGS ও SI পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক যথাক্রমে সেলসিয়াস ও কেলভিন

৯ । থার্মোমিটারে প্রসারণশীল পদার্থ রূপে কোন কোন তরল ব্যবহার করা হয়?
উঃ পারদ, অ্যালকোহল, গ্লিসারিন

১০। থার্মোমিটারে প্রসারণশীল তরল রূপে কোন পদার্থ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়?
উঃ থার্মোমিটারে প্রসারণশীল তরল রূপে পারদ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। 

১১। বাড়িতে জ্বর মাপার জন্য কোন থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়?
উঃ বাড়িতে জ্বর মাপার জন্য যে থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয় তার নাম ডাক্তারি থার্মোমিটার বা ক্লিনিক্যাল থার্মোমিটার।
 এই থার্মোমিটারে তাপমাত্রা মাপার জন্য দুটি স্কেল থাকে এগুলি হল সেলসিয়াস স্কেল ও ফারেনহাইট স্কেল।

১২। ডাক্তারি থার্মোমিটারের পাল্লা কত?
উঃ সেলসিয়াস স্কেল অনুযায়ী ডাক্তারি থার্মোমিটার এর পাল্লা 35°C থেকে 45°C  ও ফারেনহাইট স্কেল অনুযায়ী পাল্লা 95°F থেকে 110°F।

১৩। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত?
উঃ মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা 37°C বা 98.4°F।

১৪। সেলসিয়াস স্কেল ও ফারেনহাইট স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক কি?
উঃ সেলসিয়াস স্কেলে 0°C তাপমাত্রায় জল জমে বরফ হয় কিন্তু ফারেনহাইট স্কেলে জল বরফ হয় 32°F তাপমাত্রায়। আবার 100°C তাপমাত্রায় যখন জল ফুটতে থাকে তখন ফারেনহাইট স্কেলে পাঠ 212°F ।
 এক্ষেত্রে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে,  
   100°C - 0°C = 212°F - 32°F
বা, 100°C পরিবর্তন = 180°F পরিবর্তন
বা, 1°C পরিবর্তন =9/5°F পরিবর্তন

অর্থাৎ C/100=(F-32)/180
     বা, C/5 = (F-32)/9, 
এই সূত্র প্রয়োগ করে যে কোনো সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ফারেনহাইট বা যে কোন ফারেনহাইট তাপমাত্রাকে সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পরিবর্তন করা যাবে।

১৫। 40°C কত ডিগ্রী ফারেনহাইট এর সমান?
উঃ আমরা জানি C/5 = (F-32)/9, এখানে C= 40.
       C/5 = (F-32)/9
বা, 40/5 = (F-32)/9
বা, 8 = (F-32)/9
বা, (F-32) = 72
বা, F = 72+32
বা, F = 104

অর্থাৎ 40°C = 104°F

১৬। কত ডিগ্রি উষ্ণতায় সেলসিয়াস ও ফারেনহাইট স্কেলের পাঠ সমান?
উঃ -40°C = -40°F। (নিজে করে দেখ)
-40° উষ্ণতায় সেলসিয়াস ও ফারেনহাইট স্কেলের পাঠ সমান।

১৭। আপেক্ষিক তাপ কাকে বলে? 
উঃ কোন পদার্থের একক ভরের উষ্ণতা 1 একক বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ পদার্থের আপেক্ষিক তাপ বলা হয়।
যেমন- এক গ্রাম তামার উষ্ণতা 1°C বৃদ্ধি করতে 0.09 cal তাপ প্রয়োজন হয় তাই তামার আপেক্ষিক তাপ 0.09 cal/(g.°C)

১৮। আপেক্ষিক তাপের একক কি?
CGS ও SI পদ্ধতিতে আপেক্ষিক তাপের একক যথাক্রমে cal/(g.°C) ও Joule/(kg.K)

১৯। লীন তাপ বলতে কি বোঝ?
উঃ প্রমাণ চাপে একক ভরের কোন পদার্থের উষ্ণতার পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র পদার্থটির অবস্থার পরিবর্তন করতে যে পরিমাণ তাপ প্রয়োগ বা নিষ্কাশন করতে হয়, সেই পরিমান তাপকে ওই পদার্থের অবস্থান্তরের  লীন তাপ বলা হয়।

২০। লীন তাপ কত প্রকার ও কি কি?
উঃ লীন তাপ চার প্রকার। যথা
(১) গলনের লীন তাপ: উষ্ণতা স্থির রেখে কোন কঠিন পদার্থকে তরলে পরিণত করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন সেই পরিমান তাপকে ঐ পদার্থের গলনের লীন তাপ বলে।
(২) বাষ্পীভবনের লীন তাপ: উষ্ণতা স্থির রেখে কোন তরল পদার্থকে বাষ্পে পরিণত করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন সেই পরিমান তাপকে ঐ পদার্থের  বাষ্পীভবনের লীন তাপ বলে।
(৩) তরলীভবনের লীন তাপ: উষ্ণতা স্থির রেখে কোন গ্যাসীয় বা বাষ্পীয় পদার্থকে তরলে পরিণত করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন সেই পরিমান তাপকে ঐ পদার্থের তরলীভবনের লীন তাপ বলে।
(৪) কঠিনীভবনের লীন তাপ: উষ্ণতা স্থির রেখে কোন তরল পদার্থকে কঠিনে পরিণত করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন সেই পরিমান তাপকে ঐ পদার্থের কঠিনীভবনের লীন তাপ বলে।

২১। বাষ্পায়ন কাকে বলে?
উঃ যে কোন উষ্ণতায় তরলের শুধুমাত্র উপরিতল থেকে ধীরে ধীরে বাষ্পে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে বাষ্পায়ন বলে।

২২। স্ফুটন কাকে বলে?
উঃ একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় তরলের সমস্ত অংশ থেকে ফুটে দ্রুত বাষ্পে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে স্ফুটন বলে।

২৩। বাষ্পায়ন ও স্ফুটনের পার্থক্য লিখ।
উঃ

বাষ্পায়ন ও স্ফুটনের পার্থক্য

বাষ্পায়ন স্ফুটন
1. বাষ্পায়ন যে কোন উষ্ণতায় হয়। 1. স্ফুটন নির্দিষ্ট চাপে নির্দিষ্ট উষ্ণতায় হয়ে থাকে।
2. বাষ্পায়ন খুব ধীরে ধীরে হয়। 2. স্ফুটন খুব দ্রুত হয়।
3. বাষ্পায়ন নিঃশব্দে হয়। 3. স্ফুটন সশব্দে হয়।যে
4. উষ্ণতা বাড়়লে বাষ্পায়নের হার বাড়়ে। 4. স্ফুটনের সময় তরলের উষ্ণতা স্থির থাকে।
5. বাষ্পায়নের ফলে তরল ঠান্ডা হয়ে যায়। 5. স্ফুটনে তরলের উষ্ণতা স্থির থাকে।



আরো পড়ে দেখার জন্য





আমাদের আলোচনা আপনাদের কেমন লাগছে নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানান। আপনাদের মূল্যাবান মতামত আমাদের অনুপ্রানিত করবে আরো ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

Your comment will be visible after approval