এক কথায় প্রকাশ - বাংলা ব্যাকরণ - Ek Kathay Prokash in Bengali

এক কথায় প্রকাশ - বাংলা ব্যাকরণ - Ek Kathay Prokash in Bengali

এক কথায় প্রকাশ



অর্থ একই রেখে একাধিক কথায় বা শব্দে প্রকাশিত কোন ভাবতে প্রয়োজন মতো একটি শব্দে প্রকাশ করার নিয়ম বা রীতিকে 'এক কথায় প্রকাশ' বা 'বাক্য সংকোচন' বলে। ভাষাকে সহজ, সাবলীল, প্রাঞ্জল ও সুন্দর ভাবে প্রকাশ করার জন্য এক কথায় প্রকাশ এর ভূমিকা অপরিসীম। বাক্য সংকোচন বা এক কথায় প্রকাশ ভাষাকে সংক্ষিপ্ত ও অর্থবহ করে। এক্ষেত্রে অর্থের কোন পরিবর্তন না করে একাধিক পদ এমনকি একটি পূর্ণ বাক্যকেও একটি শব্দে প্রকাশ করা যায়। সংক্ষিপ্ততা ও ঋজুতা-এর জন্য বাক্যের রূপ পরিবর্তনে 'এক কথায় প্রকাশ' এর ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এমনই কিছু 'এক কথায় প্রকাশ' -এর উদাহরণ দেওয়া হল।



অকুণ্ঠ ব্যয়শীল ব্যক্তি — মুক্তহস্ত

অক্ষরজ্ঞান আয়ত্ত করেছে যে — সাক্ষর

অগভীর সর্তক নিদ্রা — কাকনিদ্রা

অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করেই কথা বলে যে — হঠকারী

অগ্রে জন্মে যে — অগ্রজ

অঙ্গের সঙ্গে বর্তমান — সাঙ্গ

অণুকে যার দ্বারা দেখা যায়– অণুবীক্ষণ

অতর্কিত অবস্থায় হত্যাকারী — আততায়ী

অতি দুর্গম স্থান — গহন

অতি নিপুণ কারিগর — ওস্তাগর

অতিক্রম করা যায় না যা — অনতিক্রম্য

অতিথির অ্যাপ্যায়ন – আতিথ্য বা আতিথেয়তা

অতিশয় দুর্গম স্থান — গহন

অনুকরণের যােগ্য — অনুকরণীয়

অন্যের অনুগ্রহে পালিতা — পরভৃতিকা

অন্যের উপর নির্ভরশীল গাছ — পরগাছা

অন্যের হয়ে স্বাক্ষর করে যে — বকলম

অপকার করার ইচ্ছা — অপচিকীর্ষা

অপরের গুণ গ্রহণ করে যে — গুণগ্রাহী

অবশ্যই হবে যা — অবশ্যম্ভাবী

অবাঞ্ছিত প্রবেশ — অনুপ্রবেশ

অভ্যাস নেই যার — অনভ্যস্ত

অরণ্যে জাত যে — আরণ্যক

অর্থহীন উক্তি — প্রলাপ

অর্থের সহিত বর্তমান — সার্থক

অলংকারের শব্দ — শিঞ্জন

অল্পেই ভাঙে যা — ক্ষণভঙ্গুর

অশ্ব রাখার স্থান — মন্দুরা বা আস্তাবল



আকাশে চরে যে — খেচর

আগমনের কোনাে তিথি নেই যার — অতিথি

আগে চিন্তা করা যায়নি যা — অচিন্ত্যপূর্ব

আবক্ষ জলে নেমে স্নান — অবগাহন

আমৃত্যু যুদ্ধ করে যে — সংশপ্তক

আয় বুঝে ব্যয় করে যিনি — মিতব্যয়ী

আয়ুর পক্ষে হিতকর — আয়ুষ্য

আরােহণ করেছে যে — আরূঢ়

আসল কথা বলার আগে মুখবন্ধ – ভণিতা

আহারে সংযম যার — মিতাহারী



ইতিহাস জানেন যিনি — ঐতিহাসিক

ইন্দ্রজাল জানেন যিনি — সৌভিক

ইন্দ্রজালে পারদর্শী — ঐন্দ্রজালিক

ইন্দ্রিয়কে জয় করেছেন যিনি — জিতেন্দ্রিয়

ইন্দ্রের হস্তী — ঐরাবত



ঈশানকোণের অধিপতি — শিব

ঈষৎ উষ্ণ — কবোষ্ণ



উৎকৃষ্ট কাজ — সুকৃতি

উপকার করার ইচ্ছা — উপচিকীর্ষা

উপন্যাস রচনা করেন যিনি— ঔপন্যাসিক

উপযুক্ত বয়স হয়েছে যার — সাবালক

উভয় পাশে বৃক্ষশ্রেণিযুক্ত পথ — বীথি

উর্বর নয় যা — উষর

উল্লেখ করা হয় না যা — ঊহ্য



ঊর্ধ্ব ও বক্রভাবে যা গমন করে — তরঙ্গ



ঋণশােধের অবস্থা নেই যার — দেউলিয়া

ঋতু সম্বন্ধীয় — আর্তব

ঋতুতে ঋতুতে যজ্ঞ করেন যিনি — ঋত্বিক

ঋষির উক্তি — আর্ষ

ঋষির মতাে — ঋষিতুল্য



এক থেকে আরম্ভ করে — একাদিক্রমে

এক পাড়ার লােক — পড়শি

এক সারিতে বসে আহার করার যােগ্য নয় — অপাঙক্তেয়

এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে যে — যাযাবর

একই গুরুর শিষ্য — সতীর্থ

একই দিনে তিন তিথির সংযােগ — এ্যহস্পর্শ

একই সময়ে বর্তমান — সমসাময়িক

একটি ধারা বয়ে চলে যা — ধারাবাহিক

একবার শুনলেই যার মনে থাকে — শ্রুতিধর

একবার সন্তান প্রসব করেন যিনি — কাকবন্ধ্যা



ঐক্যের অভাব — অনৈক্য

ঐতিহাসিক কালের আগে — প্রাগৈতিহাসিক



ওজন করে যে ব্যক্তি — তৌলিক



ঔষধের জন্য ব্যবহৃত গাছ-গাছড়া — বক্কাল



কচি ঘাসে ঢাকা জমি — শাদ্বল

কথায় যা প্রকাশ করা যায় না — অনির্বচনীয়

কষ্ঠ পর্যন্ত — আকণ্ঠ

কাচের তৈরি ঘর — শিশমহল

কাজ করতে দেরি করে যে — দীর্ঘসূত্রী

কার্য সফল হয়নি যার — অকৃতকার্য

কুকুরের ডাক — বুক্কন

কোকিলের ডাক — কুহু

কোথাও উঁচু কোথাও নীচু — বন্ধুর বা উচ্চাবচ

কোনাে কিছুতেই ভয় নেই যার — অকুতোভয়

কোনাে কিছুর চারদিকে আবর্তন — পরিক্রমা



খেয়া পারাপারের পয়সা — পারানি



গমন করে না যে — নগ

গােপন করতে ইচ্ছুক — জুগুপ্সু



ঘটনার বিবরণ দান — প্রতিবেদন



চৈত্র মাসের ফসল — চৈতালি



ছাদের উপরকার ঘর — বলভি



জয়সূচক উৎসব — জয়ন্তী

জলময় স্থান — অনূপ

জানা উচিত — ঞ্জেয়

জানার ইচ্ছা — জিজ্ঞাসা

জানু পর্যন্ত লম্বা — আজানুলম্বিত

জীবিত থেকেও মৃতের মতাে — জীবন্মৃত



ঠাকুরের ভাব — ঠাকুরলি



ডাক সামগ্রী বহনকারী — ডাকহরকরা



তুষ্ট মনে যা দেওয়া হয় — পারিতোষিক

ত্বরায় গমন করে যে — তুরগ



দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মচারী— আধিকারিক

দান করার ইচ্ছা — দিৎসা

দিনের শেষ — সায়াহ্ন

দিনের শেষ ভাগ — দিনান্ত

দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থান — দোয়াব

দুই রকম অর্থ যার — দ্ব্যর্থক



নানা বিষয়ে অগভীর জ্ঞানের অধিকারী — পল্লবগ্রাহী

নীলবর্ণ পদ্ম — ইন্দিবর

নূপুরের ধ্বনি — নিক্কণ

নৌ চলাচলের যােগ্য — নাব্য



পট আঁকেন যিনি — পটুয়া

পরিতুষ্ট হয়ে বা করার জন্য যা দেওয়া হয় — পারিতােষিক

পরিব্রাজকের জীবন বা বৃত্তি — প্রব্রজ্যা বা পরিব্রজ্যা

পরের সৌভাগ্য দেখে যে কাতর হয় — পরশ্রীকাতর

পুণ্যকর্মের ফলশ্রবণ — ফলশ্রুতি

পৃষ্ঠ (পশ্চাৎ) থেকে যিনি পোষকতা করেন — পৃষ্ঠপােষক



বৎসের প্রতি গভীর স্নেহ — বাৎসল্য

বয়সের তুল্য সখা — বয়স্য

বার বার কাঁদছে এমন — রোরুদ্যমান

বাস্তু থেকে উৎখাত হয়েছে যারা — উদবাস্তু

ব্যাকরণ জানেন যিনি — বৈয়াকরণ

ব্যাঘ্রের চর্ম — কৃত্তি



ভক্ষণের ইচ্ছা — বুভুক্ষা

ভগবান বিষ্ণুর ধনুক — শার্ঙ্গ

ভগবান বিষ্ণুর শঙ্খ — পাঞ্চজন্য



ময়ূরের ডাক — কেকা

মাথার খুলি — করোটি



যজ্ঞের পুরোহিত — ঋত্বিক

যা উদিত হচ্ছে — উদীয়মান

যা চিবিয়ে খেতে হয় — চর্ব‌্য

যাঁর কিছু নেই — নিঃস্ব

যার কোনাে অবলম্বন নেই — নিরালম্ব

যার দুটি হাতই সমান দক্ষতায় চলে— সব্যসাচী

যার মতি স্থির নেই — অস্থিরমতি

যার মৃত্যু নেই — অমর

যার শত্রু নাই — অজাতশত্রু

যুদ্ধ করতে ইচ্ছ — যুযুৎসা

যে খুব বেশি কথা বলে — বাচাল

যে নারীর হাসি শুচি — শুচিস্মিতা

যে রাস্তার দু'ধারে বড়ো বড়ো গাছ থাকে — বীথিপথ

যৌগিক অথচ বিশেষ একটি অর্থে সীমাবদ্ধ শব্দ — যােগরূঢ়



রাজতুল্য ব্যক্তি — রাজড়া

রাত্রিকালীন যুদ্ধ — সৌপ্তিক

রোজের উপার্জন — রুজিরোজগার



লাভ করার ইচ্ছা — লিপ্সা



শত্রু জন্মায়নি যার — অজাতশত্রু

শিক্ষালাভই যার উদ্দেশ্য — শিক্ষার্থী

শ্বেতবর্ণের পদ্ম — পুণ্ডরীক



সংশয় রয়েছে যার — সন্দিগ্ধ

সবার জন্য উৎসব — সর্বজনীন

সরস্বতীর বীণা — কচ্ছপী

সর্বজনের কল্যাণে — সর্বজনীন

সুধাধবলিত গৃহ বা সুধার মতো ধবল গৃহ — সৌধ

স্থপতির কাজ — স্থাপত্য

স্বপ্নে শিশুর হাসিকান্ন — দেয়ালা



হত্যার ইচ্ছা — জিঘাংসা

হাতি রাখার স্থান — বারী

হরেক রকম বােল বলতে পারে যে — হরবোলা

হাসির নাটক — প্রহসন

হৃদয়ের প্রীতিকর — হৃদ্য


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

Your comment will be visible after approval