বিষয় : পশ্চিমবঙ্গ - Informations about West Bengal

বিষয় : পশ্চিমবঙ্গ - Informations about West Bengal

বিষয় : পশ্চিমবঙ্গ



Informations about West Bengal



সূচীপত্র



1. পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি কত সালে গঠিত হয়?

2. পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রাজ্যপালের নাম কি?

3. পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর নাম কি?

4. কত সালে কোচবিহার নামক দেশীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয়?

5. পশ্চিমবঙ্গের কোন জায়গায় ফরাসিদের উপনিবেশ ছিল ?

6. পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী দেশ কয়টি ও কি কি?

7. পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য কয়টি ও কি কি?

8. পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি?

9. পশ্চিমবঙ্গের কোন শহরকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশ দ্বার বলা হয় ?

10. পশ্চিমবঙ্গের পাখিরালয় বা পক্ষীনিবাস কেন্দ্রের নাম কি?

11. আলোচ্য অংশের মূল্যায়ন



আজ আমারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবো। এখনে আমরা জানবো পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী দেশ ও রাজ্যগুলি সম্বন্ধে। পশ্চিমবঙ্গের খনিজ দ্রব্য সম্বন্ধে। প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল কে ছিলেন এবং আরো বিভিন্ন বিষয়ে সমন্ধে। পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী হয়ে বিষয়গুলি যেমন জানা প্রয়োজন তেমনি চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি সকল প্রকার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বিষয়টি খুব ভালো লাগবে।



প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি কত সালে গঠিত হয়?

উত্তর: 1947 সালে ভারতবর্ষ স্বাধীনতার সময় বঙ্গ প্রদেশ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছিল। বিশেষত বঙ্গের অধিবাসীদের ধর্মকে ভিত্তি করে বঙ্গকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। পশ্চিম অংশ পশ্চিমবঙ্গ নামে ভারতের সঙ্গে এবং পূর্ব অংশ পূর্ব পাকিস্তান নামে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরবর্তীকালে 1971 সালে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ নামে একটি স্বতন্ত্র দেশ তৈরি হয়।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রাজ্যপালের নাম কি?

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রাজ্যপাল ছিলেন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী। তিনি 15 ই আগস্ট, 1947 থেকে 21শে জুন, 1948 পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্বে ছিলেন। চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল। তিনি মাদ্রাজের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন 10ই এপ্রিল, 1952 থেকে 13ই এপ্রিল, 1954 পর্যন্ত। চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর পর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হন কৈলাশনাথ কাটজু।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর নাম কি?

 উত্তর: ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষের সময়কাল ছিল 15 ই আগস্ট 1947 থেকে 14 জানুয়ারি 1948। যদিও তিনি ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দেশ বিভাজনের ফলে সৃষ্ট প্রাদেশিক আইন সভার ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে 1948 সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ডঃ বিধান চন্দ্র রায়।  স্বাধীন ভারতে নির্বাচিত (1952 সালে নির্বাচন) পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ডঃ বিধান চন্দ্র রায়।


প্রশ্ন: কত সালে কোচবিহার নামক দেশীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয়?

উত্তর: 1515 সালে কোচ রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। কোচ রাজবংশের প্রথম রাজা ছিলেন বিশ্ব সিংহ এবং পরবর্তীতে রাজা হন তার পুত্র নরনারায়ন সিংহ। 1772 সালে কোচবিহার রাজ্যটি ব্রিটিশ শাসিত ভারতের একটি করদ রাজ্যে পরিণত হয়। এবং 1949 সালে কোচবিহারের রাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুর কোচবিহার রাজ্যটিকে ভারত সরকারের হাতে তুলে দেন। 1950 সালে কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলায় পরিণত হয়।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের কোন জায়গায় ফরাসিদের উপনিবেশ ছিল ?

উত্তর: 1863 সালে ফরাসিরা বাংলার শাসক, নবাব শায়েস্তা খানের অনুমতিক্রমে বাংলার চাঁদেরনগর বা চন্দননগরে তাদের উপনিবেশ স্থাপণ করে। 1757 খ্রিষ্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাবকে ফরাসিরা সাহায্যও করেছিলেন। ফরাসি সময়ে চন্দননগরের প্রভূত উন্নতি হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় চন্দননগর ভারতীয় বিপ্লবীদের কাছে আত্মগোপনের একটি সুবিধাজনক জায়গা ছিল। ফরাসি উপনিবেশ হওয়ায় ব্রিটিশ পুলিশেরা সহজেই সেখানে ঢুকতে পারতেন না ফলে বিপ্লবীদের সেখানে আশ্রয় নিতে সুবিধা হত। 1950 সালের 2 রা মে চন্দননগরের শাসন ভার ভারত সরকারের হাতে হস্তান্তর করা হয়। 1955 সালে চন্দননগর পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং হুগলি জেলার অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী দেশ কয়টি ও কি কি?

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী দেশ 3 টি। এগুলি হল পূর্বে বাংলাদেশ এবং উত্তরে যথাক্রমে নেপাল ও ভুটান। এদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা নেপাল ও বাংলাদেশের সীমান্তের সাথে যুক্ত।  প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে নেপাল ও ভুটানে প্রবেশের ক্ষেত্রে তেমন কোন বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে বৈদেশিক নীতি অনুযায়ী বিধি নিষেধ প্রযোজ্য আছে।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য কয়টি ও কি কি?

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য 5 টি।  এগুলি হল দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ওড়িশা, পশ্চিম দিকে ঝাড়খণ্ড ও বিহার, উত্তরে সিকিম রাজ্য ও উত্তর-পূর্বে আসাম বা অসম রাজ্য। প্রকৃত পক্ষে দেশ ও রাজ্য বিভাজনের আগে সিকিম বাদে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্য গুলি একসঙ্গেই ছিল এবং একত্রে নাম ছিল বঙ্গপ্রদেশ। পরবর্তীকালে দেশ বিভাজন ও রাজ্য বিভাজনের ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য রাজ্যের সৃষ্টি হয়।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি?

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম সান্দাকফু। এর উচ্চতা 2,636 মিটার বা 11,929 ফুট। সান্দাকফু নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে দার্জিলিং জেলার সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেনীর   সর্বোচ্চ শিখর। এই পর্বতশ্রেণীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ফালুট উচ্চতা 3,600 মিটার বা 11,800 ফুট। সান্দাকফু শিখর থেকে বিশ্বের পাঁচটি শীর্ষ পর্বতশৃঙ্গের মধ্যে চারটি শৃঙ্গ দেখা যায়। এই শৃঙ্গ গুলি হল যথাক্রমে এভারেস্ট (8,848 মিটার বা 29,029 ফুট), কাঞ্চনজঙ্ঘা (8,586 মিটার বা 28,169 ফুট), লোৎসে (8,516 মিটার বা 27,940 ফুট) এবং মাকালু (8,485 মিটার বা 27,838 ফুট)। শুধুমাত্র পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কিং অফ কারাকোরাম বা K2 (8,611 মিটার বা 28,251 ফুট) সান্দাকফু শৃঙ্গ থেকে দেখা যায় না। এছাড়া সান্দাকফু থেকে  সম্পুর্ন কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের একটি প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়।


প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের কোন শহরকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশ দ্বার বলা হয় ?

উত্তর: দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি শহরকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশ দ্বার বলা হয়। উত্তর-পূর্ব ভারত বলতে বোঝায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলিকে। রাজ্য এগুলি হল সিকিম, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও ত্রিপুরা। এদের মধ্যে  আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও ত্রিপুরা এই সাতটি রাজ্যকে একসঙ্গে সেভেন সিস্টার রাজ্য ( Seven Sister States) বলা হয়। শিলিগুড়ি শহর এই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলির সাথে বাকি ভারতের সংযোগ রক্ষা করে। আবার চীন, নেপাল, বাংলাদেশ ও ভুটানের মত আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি শহর হওয়ার জন্য শিলিগুড়ি শহরের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। শিলিগুড়ি শহরটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি অন্যতম প্রধান বাণিজ্য ও পরিবহণ কেন্দ্র। পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শিলিগুড়ি শহরটি কলকাতা ও আসানসোলের পরেই পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় বৃহত্তম মহানগর অঞ্চল।



প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের পাখিরালয় বা পক্ষীনিবাস কেন্দ্রের নাম কি?

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার কুলিক নদীর পাশে অবস্থিত অভয়ারণ্যটিকে 'কুলিক পক্ষীনিবাস বা কুলিক পাখিরালয়' বা পশ্চিমবঙ্গের পাখিরালয় বা পক্ষীনিবাস বলা হয়। কুলিক নদীর পাশে অবস্থিত বলেই একে কুলিক অভয়ারণ্যও বলা হয়। এই পাখিরালয়ে প্রায় 164 প্রজাতির পাখির আবাসস্থল রয়েছে। 2002 সালে শুমারি অনুসারে 77012 টি পাখি সারা বছর অভয়ারণ্যটিতে পরিভ্রমণ করেছে। 2003 সালে পাখির সংখ্যা বাড়ে 81,384 হয় এবং 2008 সালের শুমারি অনুসারে 91,540 টি পাখি অভয়ারণ্যটিতে পরিভ্রমণ করে। কুলিক পাখিরালয়ে প্রতিবছর প্রায় 70 হাজার থেকে 80 হাজার পরিযায়ী পাখি দেখতে পাওয়া যায়। 1985 সালে সরকারি ভাবে কুলিক অভয়ারণ্যকে "রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য"(Raiganj Wildlife Sanctuary) হিসেবে ঘোষণা করা হয়।




আলোচ্য অংশের মূল্যায়ন


MCQ on above

MCQ on above information of West Bengal

মূলায়ান

Question of

Good Try!

Corrected out of Questions!

Percentage

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ